জঙ্গি হান্নান ও দুই সহযোগীর ফাঁসি কার্যকর
পৃথক কারাগারে তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।আজ বুধবার রাত ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
অন্যদিকে, সিলেট কারাগারে জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান তাদের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাত ১০টা এক মিনিটে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ছগির মিয়া ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এক যুগেরও বেশি সময় আগে সিলেটে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যার মামলায় তাদের মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত।
সন্ধ্যার পরপরই কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার চত্বরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করে কারাগারে। কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বুধবার রাত ৮টার দিকে এবং কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) তৌহিদুল ইসলাম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কারাগারে প্রবেশ করেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারেও বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ফাঁসির প্রস্তুতি নেয়া হয়। এসময় সেখানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে আসামিদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়। মুফতি হান্নানের ভাই, স্ত্রী ও দুই মেয়ে বুধবার সকালেই কাশিমপুরে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন। অন্যদিকে, সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছান রিপনের পরিবারের সদস্যরাও।
তবে বিপুলের পরিবারের সদস্যরা সন্ধ্যা পর্যন্ত কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের আসেননি। কারাগারের সিনিয়র সুপার মো. মিজানুর রহমান বিষয়টি জানান।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে গ্রেনেড হামলায় আনোয়ার চৌধুরীসহ আরও অনেকে আহত হন। নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সম্পূরক চার্জশিটে আরেক জঙ্গি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালের নাম অন্তর্র্ভুক্ত করা হয়।
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ও মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এরপর উচ্চ আদালতে তারা আপিল করলে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর তারা রিভিউ আবেদন করলে সেটাও গত ২২ মার্চ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পরে মুফতি হান্নান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে সেটাও প্রত্যাখ্যান করা হয়। ফলে কারাবিধি অনুযায়ী, তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনও বাধা নেই।